সম্প্রতি বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা, নির্বাহী প্রতিনিধি বোর্ড ১৫৪ এই আশাবাদ ব্যক্ত করেছে যে বিশ্বের একাধিক দেশ আত্মহত্যা প্রতিরোধ এবং মানসিক স্বাস্থ্য সংরক্ষণ ও উন্নয়ণের লক্ষ্যে অত্র খাতে তাদের বিনিয়োগ বাড়িয়ে দেবে। এর ফলে আত্মহত্যা প্রতিরোধ বিষয়ে বিশ্ববাসী সচেতন ও মনোযোগী হয়ে উঠবে।
‘২০২৪ এর পরিবর্তন’ নিয়ে আকর্ষক আলোচনা মঞ্চে দীপ্তি ছড়িয়েছে। ডক্টর টেড্রস আধানম গেব্রিসুসের ইতিবাচক ভবিষ্যৎ-বাণী ও আন্তরিক প্রতিশ্রুতি শ্রবণে ইন্টারন্যাশনাল এসোসিয়েশন অব সুইসাইড প্রিভেনশন আইএএসপি আশান্বিত। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ও বিশ্ব ব্যাংক প্রকাশিত বিগত বছরের সেপ্টেম্বরের ‘ডেটা’ এটাই তুলে ধরেছে যে, বিশ্বের একাধিক দেশ বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার অকৃপণ সহযোগিতায় উন্নত মানের স্বাস্থ্য পরিষেবা গ্রহণ করতে সমর্থ হওয়া সত্তেও বিশ্বের সমগ্র জনসংখ্যার প্রায় ৫০শতাংশ পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরিষেবা গ্রহণ করতে পারছে না। কিন্তু স্বাস্থ্য উন্নয়ণ খাতে বিনিয়োগের পর্যাপ্ততা থাকলে বিশ্বের অসংখ্য মানুষ পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরিষেবা গ্রহণ করতে পারতো। বৈশ্বিক লক্ষ্য পূরণের (যেমন- ইউএইচসি এবং এসডিজি-এর) জন্যে আরো অনেক উদ্যোগ ও আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ইউএইচসি ২০৩০ এবং এসডিজি মৃত্যুর হার ৩.৪ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে স্বাস্থ্য পরিষেবা বিষয়ে যথাযথ ও অধ্যবসায়-স্নাত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ইউএইচসি ২০৩০ এবং টেকসসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এসডিজি লক্ষ্যমাত্রায় মৃত্যুর হার যে ৩.৪ কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেগুলোর এক-তৃতীয়াংশ অকাল-মৃত্যু, যেগুলো কোনো না কোনো লুকানো শারীরিক অথবা মানসিক অসুস্থতার কারণে ঘটে থাকে অথবা অল্পবয়সীদের আত্মহত্যার কারণে হয়ে থাকে। এসব অকালমৃত্যু বন্ধ করতে হবে। সামাজিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ এ জাতীয় লক্ষ্য পূরণে উল্লেখযোগ্য সহযোগিতা করতে পারে। মহাপরিচালকের তথ্যসমৃদ্ধ বার্তায় উল্লেখিত হয়েছে যে, পৃথিবীর প্রায় এক বিলিয়ন জনগোষ্ঠী মানসিক রোগে আক্রান্ত এবং এরা বেছে নিচ্ছে আত্মহননের ভুল পদক্ষেপ। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সদস্য রাষ্ট্রসমূহ যদি মানসিক স্বাস্থ্য সংরক্ষণকল্পে ও আত্মহত্যার অভিশাপমুক্ত নির্মল বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে আরো বেশি করে সহযোগিতা করে তাহলে অদূর ভবিষ্যতে বিশ্বের অসংখ্য দেশের বিপূল সংখ্যক মানুষ নিরোগ শরীর ও মনের পাশাপাশি সুদীর্ঘ পার্থিব জীবন লাভ করতে সক্ষম হবে।
অর্থপূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি ও জাতীয় পর্যায়ে যথাযথ পদক্ষেপ এসডিজির ৩.৪ শতাংশ মৃত্যুর হার কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ ফলপ্রসূ হবে বলে ধরে নেওয়া যায়।
বিশ্বের সচেতন জনগোষ্ঠী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্বাহী বোর্ড -এর ১৫৪তম প্রতিনিধি সভা গুরুত্ব উপলব্ধি করেছে এবং সভায় উচ্চারিত সুবর্ণ আগামীর প্রতিশ্রুতি শ্রবণে প্রীত হয়েছে।